Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৈমুরঃ

 

দিনাজপুরের একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় কৃতি সন্তান, প্রাথমিক যুগের অগ্রণী শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা বিভাগীয় উচ্চ কর্মকর্তা আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৈমুর দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজার মহল্লার অধিবাসী ছিলেন। উক্ত মহল্লায় তার প্রাচীন ধরনের বাসভবন এখনও অবস্থিত।

 

ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বুজর্গ ধার্মিক, ন্যায়পরায়ন, সরল ও অমায়িক ব্যক্তিত্বের অধিকারী অত্যন্ত জ্ঞান পিপাসু ও ইসলামী সাহিত্য চর্চার নিবেদিত গবেষক। কোরআন প্রবেশিকা ‘তারা জানেনা ইসলাম কি’ মুসলমানের তেত্রিশ কোটি দেবতা’ প্রভৃতি মূল্যবান গ্রন্থেও লেখক রূপে তিনি একজন যশস্বী ব্যক্তিত্ব।

 

যে কালে শিক্ষার ব্যাপারে দিনাজপুরে ছিল ‘আইয়্যামে জাহেলিয়াত’ এর যুগ, তখন তিনি শিক্ষা প্রচারে অগ্রণী ছিলেন। চাকুরী জীবনে তিনি মক্তব মাদ্রাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা কল্পে গ্রামের জনসাধারণকে উৎসাহিত করেন এবং প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলির মঞ্জুরীদানের ব্যবস্থা করে দেন। সেই যুগেও তিনি নারী শিক্ষায় অগ্রণী ছিলেন। তার ছেলে ও মেয়েরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষিত এবং চাকুরী ক্ষেত্রে উচ্চতর আসনের অধিষ্ঠিত। শেষ বয়সে তিনি চিকিৎসার জন্য কলিকাতায় যান এবং তথায় মৃত্যুবরণ করে। তিনি ১৯৪৬ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

স্বভাব কবি মোঃ নূরুল আমিন

মোঃ নূরুল আমিন। একজন স্বভাব কবি। দিনাজপুরের সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় অন্যতম প্রথিকৃৎ। এই কবি আজ মহা নিদ্রায় শায়িত। তিনি জন্মেছিলেন ১৯১৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন ঘোনাপাড়া গ্রামে এক বনেদী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা অলিমুদ্দীন সরদার এবং মাতা মোওলাতুন্নেছা পরিবিবি। স্কুল জীবন হতে তাঁর কাব্যচর্চা শুরু হয়। তিনি ১৯৩১ সালে গুরু ট্রেনিং পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে কলকাতা শিক্ষা বোর্ডের মেধা তালিকায় ১৭তম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু গুরুগিরি তাঁকে ধরে রাখতে পারেনি। বেরিয়ে পড়েন দেশ ভ্রমনে। ১৯৪৫ সালে দিনাজপুর এসে পৌঁছেন এবং সবুজ শ্যামলিমার কারুকাজ খচিত দিনাজপুরের প্রেমে পড়ে যান প্রথম দর্শনেই। স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলেন দিনাজপুরের পাহাড়পুরে।

 

কবি মোঃ নূরুল আমিন ছিলেন সহজাত কবি এবং সাংবাদিক। সাহিত্য এবং সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে দিনাজপুরের তখন শৈশবকাল। সবেমাত্র হাঁটি হাঁটি পা পা করছে সাহিত্যের আড্ডাখানা। সুনির্দিষ্ট কোন ঠিকানায় নয়, কবি মোঃ নূরুল আমিনসহ সমমনা কয়েকজন বসতেন মুন্সিপাড়া দবিরের চায়ের দোকানে, গাছের তলায় ঘাসের কার্পেটে বা কোন কবি-সাহিত্যিকের আসরে। চলত কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর কিংবা প্রবন্ধ পাঠ। এই আড্ডাখানায় যারা আড্ডা দিতেন তাদের মধ্যে ছিলেন কবি কাজি কাদের নেওয়াজ, বিশিষ্ট সমাজসেবী মঈনুদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী, কবি মোঃ নূরুল আমিন, খাজা নাজিমুদ্দিন হল লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব হেমায়েত আলী, কবি সোলেমান আলী, অধ্যাপক সোলেমান, ঐতিহাসিক মেহেরাব আলী, কবি আ.ক.শ নূর মোহাম্মদ, কবি ফুলুমদ্দীন মন্ডল, ডা. মাহাতাব উদ্দীন আহম্মেদ, কবি রসরাজ আহমাদ হোসেন, সুফী কবি আব্দুল জববার প্রমুখ। আড্ডাখানা বসত কোন নির্দিষ্ট সময় ধরে নয়। সাধারণতঃ বিকেলে বা সন্ধ্যায়।

 

কবি মোঃ নূরুল আমিন এবং তার সমমনা বন্ধুদের সাহিত্য আড্ডাকে ঘিরে একদিন পদযাত্রা শুরু হয়েছিল কবি-সাহিত্যিকদের। সেই শোভাযাত্রায় আজ অনেক প্রতিভাধর কবি সাহিত্যিক গড়ার অন্যতম কারিগর ছিলেন কবি মোঃ নূরুল আমিন। দেশ স্বাধীন হবার পরও দিনাজপুরের সাহিত্য চর্চার এই মানুষটি সাহিত্যিক গঠনের কর্মী হিসেবে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করে গেছেন। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি গঠন করেন ‘‘নওয়াজ সাহিত্য মজলিশ’’। তরুণ কবি-সাহিত্যিকদের তিনি আমৃত্যু উৎসাহ যুগিয়ে গেছেন লিখতে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে উঠতে। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে দিনাজপুর দর্পন কাব্য, নবী কাহিনী, সৃষ্টির বিচিত্র লীলা, গুঞ্চায়ে উম্মিদ, নতুন ছড়া, ছেলেমেয়েদের প্রথম পাঠ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রায় ৩০০ শতাধিক পান্ডুলিপি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী পুড়ে দেয়।

 

কবি মোঃ নূরুল আমিন শুধু দিনাজপুরের সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রেই পথিকৃৎ ছিলেন না, সাংবাদিকতা চর্চার ক্ষেত্রেও তিনি পালন করে গেছেন অগ্রণী ভূমিকা। ১৯৫৮ সাল হতে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের দিনাজপুর সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এ সময়ে দিনাজপুরে সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন গুটি কয়েক ব্যক্তি। এঁরা হলেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী, অধ্যক্ষ মোকাররম হোসেন, তাজমিলুর রহমান, আনোয়ারা রহমান, মাসুমা খাতুন, কবি মোঃ নূরুল আমিন, নেহাল আক্তার, মেহেরাব আলী, এ হেমায়েত আলী, আব্দুল বাড়ী ও বশির উদ্দিন প্রমুখ। দিনাজপুরে সাংবাদিকতার বীজ বপনকাল হিসেবে এই সময়টাকেই ধরা হয়। ১৯৬৫ সালে দিনাজপুর প্রথম গঠন করা হয় প্রেসক্লাব। সেই প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন কবি মোঃ নূরুল আমিন। তবে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আব্দুর রউফ চৌধুরীর মতে কোন আওয়ামী লীগের সদস্য প্রেসক্লাবের সভাপতি হলে গভর্নর মোনেম খান সেই প্রেসক্লাবের উদ্বোধন করবেন না। তবে মুসলিম লীগের কোন সদস্যকে সভাপতি করলে গভর্নর সে অনুষ্ঠানে আসবেন। সে কারণেই কবি মোঃ নূরুল আমিন স্বেচ্ছায় সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং তৎকালীন সদর মহকুমা মুসলিম লীগের সম্পাদক তাহের উদ্দিন আহম্মেদকে সভাপতি করা হয়। উদ্বোধনের কিছু দিন পরেই কবি মোঃ নূরুল আমিনকে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের আবারো সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। কবি মোঃ নূরুল আমিন দীর্ঘ একযুগ (১৯৬০-১৯৬৪) প্রেসক্লাবের সাথে জড়িত থেকে কার্যকর নেতৃত্ব দিয়েছেন সাংবাদিকদের। দিনাজপুরে সাংবাদিকতা বিকাশের ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

 

দিনাজপুরে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র কবি মোঃ নূরুল আমিন ২০০০ সালের ২২শে নভেম্বর সকাল ৮.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। দিনাজপুরের আপামর জনসাধারণ তাঁকে চিরদিন গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।

মির্জা কাদের বকস্

মির্জাপুরের বিখ্যাত মির্জা পরিবারের কৃতিসন্তান কাদের বক্স জেলা বারের একজন লব্ধ প্রতিষ্ঠ আইনজীবি ছিলেন। মুসলিম লীগ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (১৯১৫-১৬), বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য (এমএলসি), জেলা বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভৃতি বহু দায়িত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব ছাড়াও সমকালীন বহু সামাজিক সংস্থা, সংগঠন, বিশেষ করে শিক্ষা বিস্তারে একজন অক্লান্ত পরিশ্রমী ও উদ্যোক্তা ছিলেন। সাহসিকতা, নির্ভিক কন্ঠ ও স্পষ্টবাদীতা ছিল তার সহজাত চরিত্রগুণ। সেজন্য তাকে বলা হতো দিনাজপুরের সিংহ পুরুষ। তিনি যে কালের মানুষ তখন দেশে প্রবল সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিদ্বেষ ছিল। কিন্তু সমাজ মনের সেই দুরবস্থাটি তার কাছে ছিল অপ্রীতিকর ও অসহ্যকর। সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেলেই তিনি প্রতিপক্ষকে ছুঁড়ে মারতেন রুঢ়তম উচিত কথা। স্বীয় সমাজের দাবী আদায়ের পটভূমিতেও তিরন ছিলেন আপোশহীন নেতা। এ নিয়ে প্রচলিত প্রচুর ঘটনাও গল্প কাহিনীর দর্পণে ভাস্বর হয়ে আছে তার সত্যিকারের পরিচয়। বালুবাড়ীতে স্বীয় বাসভবনের মসজিদটি (সাবেক মসজিদ) তারই আমলে নির্মিত হয়। তিনি ১৯৪৫ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

আলহাজ্ব হেমায়েত আলী টি.কেঃ

খাজা নাজিমউদ্দিন মুসলিম হল ও লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা হেমায়েত আলী লালবাগ মহল্লার অধিবাসী আদালতের সেরেস্তাদার ছিলেন। জনকল্যাণমূলক একটি বিশিষ্ট কাজ করতে পারায় দেশের ইতিহাসে তিনি একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব। ত্রিশের দশকে তার চেষ্টায় একটি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার সূচনা হয় (১৯৩৩) যখন দিনাজপুর শহরে মুসলমানদের জ্ঞানচর্চার স্বতন্ত্র কোন জ্ঞাণপীঠ ছিল না। এমন কি ছিল না অন্য কোন সামাজিক প্রতিষ্ঠান। অসংখ্যা বাধা বিপত্তি; বিশেষ করে আর্থিক সংকট উৎরিয়ে তিনি যে প্রতিষ্ঠানটি গড়তে সক্ষম হন তা শুধু জেলার নয় দেশের গৌরব বটে। কোন সামাজিক কাজে আজীবন নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিত্ব রূপে তিনি জেলার ইতিহাসে অদ্বিতীয়। ১৯৪১ সালে তারই উদ্যোগে মাসিক নওরোজ পত্রিকা বের হয়, তদুদ্দেশ্যে স্থাপিত নওরোজ প্রিন্টিং প্রেস (লিঃ) ১৯৫০ সালে যখন আমিনুল হক সাহেবকে সভাপতি ও মেহরাব আলীকে সম্পাদক করে নওরোজ সাহিত্যে মজলিস স্থাপিত হয়, তিনি হন তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ১৯৬৮ সালে যখন জেলা প্রশাসক আঃ কাঃ মঃ যাকারিয়া ও মেহরাব আলীর যৌথ প্রচেষ্টায় দিনাজপুর যাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রেও তার পৃষ্ঠপোষতা ছিল সর্বপ্রথম। ১৯৫৪ সালে তার আজীবন নিঃস্বার্থ সমাজ সেবার স্বীকৃতি স্বরূপ নওরোজ সাহিত্যে মজলিশ কর্তৃক বোস্তান হলে আয়োজিত সাহিত্যে সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে নাগরিক সম্বর্ধনা দেয়া হয়, তৎসঙ্গে দেয়া হয় কিছু মূল্যবান উপহার। যেহেতু তিনি ছিলেন জেলাবাসীর জ্ঞাচর্চার প্রাণ পুকুরষ। সমকালীন রাজনীতির প্রেক্ষিতে তার মধ্যে বশী মাত্রায় পাকিস্তান প্রীতি থাকায় পুরস্কার স্বরূপ পাক সরকার কর্তৃক তিনি টি,কে উপাধি ভূষিত হন। মৃত্যুঃ ১৯৬৯।

তিনি ১৯৬৯ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

মহর্ষি ভবন মোহন করঃ

মহর্ষি নামে প্রসিদ্ধ এই মহান ব্যক্তি বাংলা স্কুলের পন্ডিত ছিলেন। ঢাকা থেকে শিক্ষকতার চাকুরী নিয়ে দিনাজপুর আসেন (১৮৬২) এবং শিক্ষকতার পাশাপাশি মানবিক সেবক রূপে আত্মনিয়োগ করেন। বিনামূল্যে হোমিওপ্যাথী চিকিৎসা ও ব্রাক্ষমতের প্রচার এ দুটো কাজেরই তিনি ছিলেন এতদঞ্চলের পথিকৃৎ। ব্রাক্ষমতের প্রচারে সাফল্য লাভ করতে না পারলেও স্থানীয় অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার ও বিনামূল্যে লোকের বাড়ী বাড়ী গিয়ে স্বেচ্ছায় হোমিও চিকিৎসা বিতরণের মাধ্যমে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আর্তমানবতা সেবায় আত্মদানের যে আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তার জন্য তিনি যুগের ইতিহাসে মহর্ষি নামে পরিচিত। সকলের চেষ্টায় বালুবাড়ীতে একটি হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপিত হয় (১৮৮৬), যা আজো তারই অমর নামের স্মৃতি বহন করছে। তিনি ১৯২৭ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

হাজী মোহাম্মদ দানেশঃ

পরাধীন যুগের আলীগড়ের এমএ এবং এলএলবি হাজী দানেশ আজীবন বৈপ্লবিক রাজনৈতিক দর্শনের সংগ্রামী অনুশীলন ছাড়া আত্মসুখের জন্য জীবনে কিছুই করে যাননি। তিনি ছিলেন মানুষের সুখে দুঃখে ও প্রয়োজনে, অভাব অভিযোগের প্রতিবিধানের পটভূমিতে একজন আপ-খোরাকী স্বেচ্ছাকর্মী। এই অনন্য মানসিকতার জন্যই তিনি হতে পেরেছিলেন গণ মানুষের মুক্তিদাতা নেতা। রাজনৈতিক আন্দোলনের পরিবর্তে তার সংগ্রাম ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যার্জনে। কৃষক সমিতির মাধ্যমে ১৯৩৭ সালে রাজনীতিতে তার প্রথম পদার্পন। ৪৬ এর তেভাগা আন্দোলনে তিনি একটি চিরস্মরণীয় কিম্বদন্তী। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে তিনি যুক্তফ্রন্ট ভূক্ত এমপি হন। তখন দেশময় তার জনপ্রিয়তার স্বর্ণযুগ। সেই সুবাদে মন্ত্রী হওয়ার উজ্জল সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তার কর্মধারায় অতিমাত্রায় কমিউনিষ্ট গন্ধ থাকায় তা হতে পারেননি। একনীতির কট্টোরপন্থী নেতা হয়েও শেষ জীবনের কতিপয় কর্মকান্ডে; বিশেষ করে স্বৈরাচারী শাসনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংম্পৃক্ত হয়ে পড়ায় বড় বেশী বিতর্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অনেক স্পষ্টবাদীর মতে-তার দৈহিক মৃত্যু না হতেই তার সুদীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের মৃত্যু হয় আগে ভাগেই। দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তারই নামে অমর স্মৃতি। তিনি ১৯৮৫ সালে মৃত্যুবরন করেন।


এম আব্দুর রহিম 

এম আব্দুর রহিম (২১ নভেম্বর ১৯২৭ - ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে দিনাজপুর সদর ও চিরিরবন্দর (আংশিক) থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান। আব্দুর রহিমের জন্ম ১৯২৭ সালের ২১ নভেম্বর দিনাজপুর জেলায় । মাদ্রাসা শিক্ষায় শুরু হয় তার প্রথম পাঠ। ১৯৪২ সালে জুনিয়র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী হাই মাদ্রাসা (বর্তমান : হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) হতে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৫০ সালে ১ম বর্ষে ভর্তি হন রাজশাহী কলেজে। সেখান থেকে ভর্তি হন কারমাইকেল কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পর ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে বি এ পাশ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে এল এল বি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৬০ সালে আইনজীবী হিসেবে দিনাজপুর বারে আইন পেশা শুরু করেন। ছাত্র থাকা অবস্থায় পাকিস্তান বিরোধী স্বাধিকার আন্দোলনে যোগ দেন। রাজশাহী কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের সকল কর্মসূচিতে অংশ নেন। কলেজের শহীদ মিনার নির্মাণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে নির্বাচনী কাজ করেন।

আব্দুর রহিম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ অন্যান্য নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে দিনাজপুর সদর ও চিরিরবন্দর (আংশিক) থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনত বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হন তিনি। তিনি দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুর রহিম দুই ছেলে ও চার মেয়ের পিতা। বড় ছেলে হলেন বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং ছোট ছেলে হলেন সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম। আব্দুর রহিম ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ঢাকার বার্ডেমে মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৮ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদান করে।


খাঁন বাহাদুর একিনউদ্দিন আহমদঃ

জেলার মুসলিম নেতৃত্বের জনক ও বারের প্রথম ইংরেজীনবীশ মুসলমান আইনজীবি (১৮৯২)। জেলাবাসী মুসলমানদের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান দিনাজপুর মুসলমান সভার (১৯০৪) প্রতিষ্ঠাতা ও মুসলিম হোষ্টেল (১৯১০) নামক মুসলমান ছাত্রাবাসের স্থাপয়িতা, এমনকি জেলার রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারায় প্রথম এমএলএ হিসেবে জেলাবাসী মুসলিম জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ রাজনীতির পটভূমিতে তিনি প্রচুর অবদান রাখেন মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায়। কৃতিত্বপূর্ণ কাজের পুরস্কার স্বরূপ খাঁন বাহাদুর উপাধি লাভ করেন। তিনি ১৯৩৩ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

শহীদ সাংবাদিক গোলাম মোস্তফাঃ

দিনাজপুর এসএন কলেজের বিপ্লবী ছাত্রনেতা ও সংগঠক-সাহিত্য, নাট্যাভিনয়, খেলাধূলা প্রভৃতি বিবিধ যুব উন্নয়নমূলক কাজের নির্বিষ্ট নিবেদিত কর্মী ছিলেন আঃ নঃ মঃ গোলাম মোস্তফা। সাংবাদিকতা ক্ষেত্রেই বেশী প্রবণতা ও দক্ষতা ছিল ছাত্রাবস্থা থেকেই। তারই প্রধান উদ্যোগে শহর থেকে পাক্ষিক কাঞ্চন প্রকাশিত হয় (১৯৬৩) সাংবাদিকতা ছাড়াও সাধারণ লেখালেখিতেও ছিল তার ক্ষুরধার হাত। তার মধ্যে যে প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিভার সম্ভাবনা ছিল তার সম্যক বিকাশের ক্ষেত্রের উপযোগিতা দিনাজপুরে ছিল না। ফলে সাংবাদিকতার চাকুরী নিয়ে ঢাকায় যান এবং বিকাশের বিশাল ক্ষেত্র খুঁজে পান। এর মধ্যে শুরু হয় ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকারগণ কর্তৃক বুদ্ধিজীবি নিধনযজ্ঞ। এই প্রতিশ্রুতিশীল তরুণও ঘাতকদের শিকার হন, অস্ত্রাঘাতে নিহন হন নিষ্ঠুর ভাবে। তখন তিনি ঢাকায় দৈনিক আজাদ পত্রিকায় সাংবাদিকতায় চাকুরীরত। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবিগণের একজন ছিলেন দিনাজপুরের এই প্রিয় সন্তান। তিনি ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

 

গোলাম রব্বানী আহমেদঃ

প্রথম দিকের জেলাবাসী মুসলমান উচ্চ শিক্ষিতদের অন্যতম বিশিষ্ট মেধাবী শিক্ষাবিদ গোলাম রব্বানী স্কুল পরিদর্শক ছিলেন। বিজ্ঞ ইংরেজী ভাষাবিদ বলে চাকুরী মহলে তার প্রচুর সুনাম ছিল। চাকুরী থেকে অবসরান্তে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৪২ সালে সদর এলাকার উপ-নির্বাচনে প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য হন। স্বল্পকালীন রাজনৈতিক জীবনে জনসাধারণের জন্য বড় কিছু সুবিধা করতে পারার আগেই ১৯৪৬ এর গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আসে। তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেন। দিনাজপুর সদর উপজেলার পাটুয়াপাড়ায় তার বাস ভবন ছিল। তিনি ১৯৬১ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

ক্ষেত্রমোহন ভট্টাচার্য্য (১৯০৬-১৯৮২):

ঐতিহ্যবাহী দিনাজপুর শহরের খ্যাতনামা সংগীত সাধক ও শিক্ষক প্রয়াত ক্ষেত্রমোহন ভট্টাচার্য্য  ১৯০৬ সালের ০৬ নভেম্বর  দিনাজপুর জেলাধীন নবাবগঞ্জ  থানার নির্শা কাজলদিঘী  গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত  ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন নবাবগঞ্জের  সম্ভ্রান্ত জমিদার আশুতোষ ভট্টাচার্য্য। তাঁর শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে মধ্য বালুবাড়ী পল্লীশ্রী সংলগ্ন দিনাজপুর শহরে অবস্থিত তাঁর পৈত্রিক নিবাসে। আজও সেই বিশাল আয়তনের বাড়ীটি  জরাজীর্ন অবস্থায় তাঁর স্মৃতি বহণ করে চলেছে। পরবর্তীতে জীবনের অন্তিম মুহুর্তে তিনি দিনাজপুর শহরের নিমনগর মহিলা কলেজ (সাবেক সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) মোড়ে  আবাসন গ্রহণ করেন। তাঁর জীবনকালের সমস্তটা  জুড়েই একজন সংগীত  শিক্ষক, শিল্পী এবং সর্বোপরী  একজন সংগীত সাধক  হিসেবে  আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর সুর করা বিভিন্ন গানের রেকর্ড সারা বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।  তিনি ছিলেন কলকাতা বেতারের নিয়মিত শিল্পী। ব্যক্তিগত  ও পারিবারিক কারনে তিনি চিরকুমার ছিলেন। ২২শে জুন ১৯৮২ সালে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর ছাত্র-শিষ্যরা স্বনামে দিনাজপুর, ঢাকা, কলকাতা সহ সারা বাংলাদেশ ও  পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন।

ক্ষেত্রমোহন ভট্টাচার্য্য পাঠাগারের উদ্যোগে প্রতি বছর তাঁর  জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা,  গুণীজন সংবর্ধনা  ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

 

চারণ কবি আমিরুদ্দিন সরকারঃ 

কবি গানের সরকার রূপে জনপ্রিয় ছিলেন তদীয় জীবদ্দশায়। বিশেষ করে গণ মানুষের কবিয়াল ছিলেন। শতাধিক কবিতা পুস্তক রচনা করেন। তবে পুস্তিকা মাত্রই ১০/১৫ পৃষ্ঠায় সীমাবদ্ধ। যেমনি চেহারায়, তেমনি কথাবার্তায়, কবিতা পাঠে মজলিশে ও কবিগাণের আসরে ছিলেন রসিক মানুষ। বার্ধক্য বয়সে আশির দশকে পাটুয়াপাড়ায় ইন্তেকাল করেন। ত্রিশ চল্লিশ দশকের সুকন্ঠ গায়ক মোঃ নুরুল ইসলাম ছিলেন তারই পুত্র। তিনি আশির দশকে মৃত্যু বরণ করেন।

 

 

ডাঃ আনোয়ারা খাতুনঃ 

ক্ষেত্রীপাড়ার খাঁ বংশীয় চৌধুরী পরিবারের আত্মবংশীয় কৃতি কন্যা আনোয়ারা খাতুন দিনাজপুর তথা বাংলাদেশের প্রথম মুসলিম মহিলা ডাক্তার। ১৯৪২ সালে কলিকাতা থেকে এম বি পাশ করেন এবং পরে লন্ডন রয়েল কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। তার আজীবন কর্মক্ষেত্র কলিকাতা। কলিকাতার পার্কভিউ নার্সিং হোম এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালিকা রূপে তিনি আজীবন মানুষের চিকিৎসায় নিয়োজিত থেকে প্রচুর খ্যাতি ও কৃতিত্বের অধিকারী। তার কৃতিত্ব জেলাবাসীরই গর্ব ও গৌরব। তিনি ১৯১৯ সালে জন্ম গ্রহন করেন।

 

 

রহিম উদ্দিন আহমদঃ

দিনাজপুর বারের লব্ধ প্রতিষ্ঠিত আইনজীবি রহিমউদ্দিন আহমদ ছিলেন দুটি যুগান্তকারী কর্মকান্ডের আলোকে দিনাজপুরের ইতিহাসে স্বনামধন্য। ২১ এর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দিনাজপুরের ভাষা বিপ্লবীদের কর্ণধার ছিলেন তিনি এবং পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগ সরকারের যদৃচ্ছা শোষণ ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরোধীতায় মওলানা ভাষাণীর ডাকে জেলা আওয়ামী লীগ গঠনের ভূমিকায় দুঃসাহসিক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনিই। কাজেই তিনি একাধারে ছিলেন জেলা পর্যায়ে ভাষা আন্দোলনের ভাষা-সেনাপতি, তদ্রুপ জেলা পর্যায়ে আওয়ামী লগি সংগঠনের জনকও। দিনাজপুর জেলার তিনি প্রথম নেতা যার কন্ঠে ছিল বিপ্লবী প্রতিবাদী সুর এবং অযৌক্তিক ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠিত হওয়ার পর থেকেই যার অবস্থান ছিল বিরোধীয় মঞ্চে। ১৯৫৩ সালে তারই নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগ গঠিত হয় এবং তার প্রথম সভাপতি হয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট দলের এম, পি হন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাষা আন্দোলদের নেতৃত্ব দেয়ার রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে জেলায় প্রথম কারারুদ্ধ হন। তার প্রতিবাদী নেতৃত্বেও জন্য বরাবর বিব্রতকর অবস্থায় ভুগতেন পাকিস্তানী জেলা প্রশাসক। কিন্তু জীবনের শেষ অধ্যায়ের কোন এক সময় থেকে রাজনৈতিক কর্মকোলাহলের প্রতি তার মানসিক স্বচ্ছন্দতাবোধের অভাব দেখা দেয়ায় তিনি রাজনীতি ছেড়েই দেন। বারের যোগাযোগটুকু রক্ষা করে চলেন শুধু। তিনি ১৯৮১ খ্রীষ্টাব্দেমৃত্যু বরণ করেন।

 

 

ডাক্তার নইমউদ্দিন আহমদঃ

ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিমনা, স্বাধীনতাকামী ও সামাজিক উন্নয়নমুখী কর্মধারায় আজীবন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার নইমউদ্দিন আহমদ জেলার একজন বিশিষ্ট ও সস্মানীয় ব্যক্তিত্ব। ১৯৪০ সালে তিনি কলিকাতা থেকে ডাক্তারী (এলএমএফ) পাশ করেন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও আত্মনিয়োগ করেন রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারায় ও সমাজসেবা কাজে। সময়টা ছিল কংগ্রেস, লীগ ও তেভাগা আন্দোলনের লক্ষ্যে পৌছানোর চূড়ান্ত সক্রিয়তার যুগ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৩৫০ এর মতান্তরে ৪৭ এর দেশ ভাগাভাগির মত বহু বিপর্যয়কর ঘটনায় তখন চলছিল জাতীয় যুগসন্ধিক্ষণ। এই বিক্ষুব্ধ পটভূমিতে ডাঃ আহমেদের রয়েছে প্রচুর অবদান। পাকিস্তানী আমলে ও স্বাধীনোত্তর যুগে জেলার যাবতীয় দুর্দিনে ও প্রয়োজন বিভিন্ন কর্ম প্রাঙ্গনে তার ভূমিকা প্রশংসীয়। তিনি জেলা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার (১৯৫৩) অন্যতম, ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্ট গঠনের সেক্রেটারী, জেলা পরিবার পরিকল্পনা সমিতির সভাপতিসহ অনেক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। স্বীয় পেশায়  অমনোযোগী হয়েও এসব কাজ ও ঝামেলার মধ্যেও তার রোগ নির্ণয়ে সুক্ষ্মতা আশ্চর্যজনক। তার জন্ম ১৯৯৪ সালে। তিনি শহরের ষষ্টীতলা মহল্লার বাসিন্দা।